কবুতরের বিভিন্ন রোগ ,লক্ষণ,প্রতিকার

 


হাঁসের মুরগির রোগগুলো কবুতরের মধ্যে দেখা দিয়ে থাকে।যেমন :

১.কবুতরের ককসিডিওসিস বা পাতলা চুনযুক্ত পায়খানা।

২.সালমোনেলা।

৩.রানিক্ষেত পি এমভি/নিউ ক্যাসল ডিজিজ।

৪কৃমি।

৫. ক্যাংকার বা মুখে ঘা।

৬. ক্রনিক রেসপিরেটরি ডিজিজ সি আর ডি।

৭. পক্স বা

৮. বার্ড ফ্লু ইত্যাদি রোগ হতে দেখা যায়। প্রায় সব রোগের জন্যই বিভিন্ন কোম্পানির ঔষধ পাওয়া যায়। আমাদের দেশে পশু সম্পদ গবেষণাগার হতে রানিক্ষেত , পক্স ইত্যাদির টিকা বা প্রতিষেধক পাওয়া যায়।আজ রোগ গুলি সম্পর্কে কিছু আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।

কবুতরের ককসিডিওসিস বা পাতলা চুনযুক্ত পায়খানা।:

 এটি একটি পরজীবী। আইমেরিয়া গণের বিভিন্ন প্রজাতির প্রোটোজোয়া (Protozoa) থেকে এ রোগ সৃষ্টি হয়। বাচ্চা কবুতরের ক্ষেত্রে এ রোগের প্রভাব তীব্র ও ভয়াবহ হয়। অনেকক্ষেত্রে 70 পার্সেন্ট থেকে 80 পার্সেন্ট বাচ্চা এ রোগে আক্রান্ত হলে মারা যায়।যেকোনো বয়সে সংক্রমণ হতে পারে।তবে চিকিৎসায় রোগ সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম

১.অধিক আদ্রতা এবং খোপের সেঁতসেঁতে ভাব রোগ ছড়ানোর উপযুক্ত মাধ্যম। ২.আক্রান্ত মুরগির কবুতরের পায়খানার মাধ্যমে জীবাণু বের হয়ে আসে ফলে খাদ্য পানি ইত্যাদি দূষিত হয়।এ দূষিত খাদ্য-পানীয় বা বসবাসের স্থানের এর মাধ্যমে সুস্থ কবুতর এ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।

রোগের লক্ষণ:

১.কোকসিডিওসিসের প্রথম লক্ষণগুলির মধ্যে একটি হলো খাবার এবং পানির ব্যবহার কমে যায়।

২.পাতলা পায়খানা করে।

৩.পায়খানার সাথে রক্ত নির্গত হয় এজন্য এ লক্ষ্যে রক্ত আমাশয় বলা হয়।

৩.খাদ্য খাওয়া বন্ধ করে দেয়।

৪. পালক উস্কোখুস্কো হয়ে যায়।

৫.মাথা নিচের দিকে ঝুলে পড়ে এবং ঝিমাতে থাকে।

৬.কবুতর মারা যায়।

চিকিৎসা:

মুরগির রক্ত আমাশয় ঔষধ

মুরগির রক্ত আমাশয় বা সাধারণ আমাশয় রোগে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। কেননা এ রোগে মৃত্যুর হার বেশি।

এন্টিবায়টিক ঔষধ

ইএসবি ৩ প্লাস– প্রতি লিটার খাবার পানিতে 1 গ্রাম।

 ইএসবি ৩ প্লাস মিশিয়ে তিন থেকে সাত দিন খাওয়াতে হবে।

ককট্রিট ডব্লিউ ডি-পি– প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ গ্রাম মিশিয়ে ৫-৭ দিন খাওয়াতে হবে।

ককসিকিউর পাওডার– প্রতি লিটার খাবার পানিতে 2 থেকে ২.৫ গ্রাম মিশিয়ে তিন থেকে পাঁচ দিন খাওয়াতে হবে।

অন্যান্য ঔষধ:

কবুতরের আমাশয় আথবা কবুতরের রক্ত আমাশয় রোগের জন্য রোগের উপসর্গ বুঝে আরো অনেক প্রকার ঔষধ প্রয়োগ করার প্রয়োজন হতে পারে। এর মধ্যে পিএইচ বা এসিডিফায়ার, স্যালাইন, প্রবায়টিক এবং প্রিবায়টিক প্রিমিক্স ইত্যাদি অন্যতম। এ ধরনের চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে। তবে ঔষধ প্রয়োগের পূর্বে অবশ্যই অভিজ্ঞ কনসালটেন্ট বা প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া আবশ্যক।

প্রতিকার:

তবে রোগের আগে সব সময় চেষ্টা করা যাতে রোগ না হয় এ জন্য ব্যাবস্থা নেওয়া।কিছু পদক্ষেপ নিলে রোগ থেকে দূরে থাকা যায়।যেমন -

১.কবুতরের বসবাসের জায়গা পরিষ্কার রাখা।

২.কবুতরকে কৃমি মুক্ত রাখা।

৩.সবসময় পরিষ্কার পাত্রে পানি এবং খাবার দেওয়া,পাত্র পরিষ্কার রাখা।

৪. অসুস্থ কবুতরকে আলাদা রাখা বা জবাই করে পুঁতে ফেলা।

সালমোনেলা:

 এ রোগটি গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা ঘটিত হয় ।বাচ্চা কবুতরের জন্য এটি মরণশীল একটি রোগ এবং বড় কবুতরের জন্য একই রকম।তবে এ রোগটি খুব দ্রুত চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।তাই এই রোগ হলে তাড়াতাড়ি অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রোগ নির্মূলের ব্যাবস্থা করতে হবে।

লক্ষণ:

কবুতর যখন আক্রান্ত হবে তখন কিছু লক্ষণ দেখা যায়।

১.কবুতর মাথা নিচু করে ঝীমায়।

২.শাষকষ্ট দেখা যায়।

৩.সাদা আঠাল এবং চুনা পায়খানা করে।

৪.গাড়ো সবুজ রঙের পায়খানা করে ।

৫.বেশির ভাগ সময় লক্ষ করলে দেখা যায় পায়খানা পিছনের পালকে লেগে আছে।

৬.কবুতর খোঁড়াতে থাকে এবং পাখা ঝুলে পড়তে দেখা যায়।

৭.বমি করতে থাকে।

8.খাবারের প্রতি কোনো আগ্রহ থাকে না।

৯.খুব বেশী পরিমাণে পানি খায় ।

চিকিৎসা:

Hameco-pH vet – হেমিকো পিএইচ ভেট প্রতিরোধে বা চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়া যায়।

প্রতিরোধে:

প্রতি লিটার পানিতে এ ১- ২ মিলি করে ৫ দিন প্রতি মাসে।অথবা পশু চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী।

চিকিৎসা:রোগ দেখা দিলে ২.৫ মিলি প্রতি লিটার পানির সাথে।অথবা পশু চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী।

প্রতিরোধ:

বিশ্বব্যাপী যে আবহাওয়ার পরিবর্তন তা থেকে প্রাণী কুলকে টিকে থাকার জন্য দরকার খাবারের মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা।ভিটামিন ডি,ভিটামিন সি,জিংক,মিনারেল ও প্রবায়োটিক রোগ প্রতিরোধে অনেক ভূমিকা পালন করে।

আর সম্ভব হলে টিকা দেওয়া তাহলে নদিষ্ট সময় পর পর।

কবুতরকে কৃমি মুক্ত করা।

রানিক্ষেত পি এমভি/নিউ ক্যাসল ডিজিজ,কৃমি, ক্যাংকার বা মুখে ঘা, ক্রনিক রেসপিরেটরি ডিজিজ সি আর ডি,পক্স বা বার্ড ফ্লু এ গুলি নিয়ে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।সাথে থাকুন।

আরও পড়ুন আর আমাদের follow দিয়ে রাখুন তাহলে আমাদের পোস্টটি সর্বপ্রথম আপনার কাছে যাবে।ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আর আপনার কবুতর সুস্থ থাকুক এই কামনা করি।

আমিন 












Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.